এইচএসসি ডিপ্লোমা অর্থনীতি ১২শ শ্রেণীর ৪র্থ সপ্তাহের এসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১|HSC Diploma in Economics 12th Class 4th Week Assignment Answer 2021


অ্যাসাইনমেন্ট : ‘চাহিদা বিধি অনুযায়ী কোন নির্দিষ্ট সময়ে একটি দ্রব্যের দাম বাড়লে তার চাহিদা কমে এবং দাম। কমলে চাহিদা বাড়ে, কিন্তু বাস্তবে কিছু ক্ষেত্রে ইহার। ব্যতিক্রম দেখা যায়বিধিটির ব্যতিক্রমের কারণ বিশ্লেষণ।
শিখনফল/বিষয়বস্তু :
অধ্যায়ঃ ৩ চাহিদা, যােগান ও দাম নির্ধারণ
নির্দেশনা (সংকেত/ ধাপ/ পরিধি):
চাহিদা এর ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে
চাহিদা বিধি এর ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে
স্থিতিস্থাপক ও অস্থিতিস্থাপক চাহিদা এর ধারণা
ব্যাখ্যা করতে হবে
চাহিদা বিধির ব্যতিক্রমের কারণ বর্ণনা করতে হবে।

এইচএসসি ডিপ্লোমা ইন কমার্স ১২শ শ্রেণির অর্থনীতি ৪র্থ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টের সমাধান ২০২১

চাহিদা এর ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে
সাধারন অর্থে, কোন কিছু পাওয়ার আকাঙ্খা বা ইচ্ছাকে চাহিদা বলে। কিন্তুু অর্থনীতিতে চাহিদা বলতে ভোক্তার কোন দ্রব্য বা সেবা পাওয়ার আকাঙ্খার সাথে সাথে তা ক্রয়ের অর্থ, সামর্থ্য এবং ব্যয় করার ইচ্ছা থাকলে তবেই ঐ আকাঙ্খাকে চাহিদা বলে। ধরা যাক, রহিম আর্থিকভাবে অসচ্ছল। সে একটি মোটর গাড়ী কেনার জন্য আকাঙ্খা প্রকাশ করল কিন্তুু তা ক্রয় করার মতো আর্থিক সামর্থ্য তার নেই। কাজেই, এক্ষেত্রে রহিমের মোটর গাড়ির জন্য আকাঙ্খাকে চাহিদা বলা যাবে না। আবার একজন ধনী অথচ
কৃপণ লোকের গাড়ী কেনার ইচ্ছাকে চাহিদা বলা যাবে না। কেননা তার ক্রয়ক্ষমতা থাকলেও অর্থ ব্যয় করার ইচ্ছা নেই। 
সুতরাং অর্থনীতিতে চাহিদা হতে হলে নিম্নোক্ত তিনটি শর্ত অবশ্যই পূরণীয়। শর্ত তিনটি হলো :
(১) কোন দ্রব্য পাওয়ার আকাঙ্খা;
(২) দ্রব্যটি ক্রয় করার প্রয়োজনীয় আর্থিক সামর্থ্য; এবং
(৩) প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় করে দ্রব্যটি ক্রয় করার ইচ্ছা।

সুতরাং আমরা বলতে পারি, কোন ক্রেতা বা ভোক্তার একটি নির্দিষ্ট দ্রব্য পাওয়ার আকাঙ্খা, আর্থিক সামর্থ্য বা ক্রয়ক্ষমতা এবং নির্দিষ্ট দামে ক্রয় করার ইচ্ছা থাকলে তবে তাকেই অর্থনীতিতে চাহিদা বলে।

চাহিদা বিধি এর ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে
”অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত” থেকে কোন দ্রব্যের বাজার দামের সাথে তার চাহিদার পরিমাণের মধ্যে ক্রিয়াগত সম্পর্ক যে বিধির সাহায্যে প্রকাশ করা হয় তাকে চাহিদা বিধি বলে। ”অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত” অর্থ্যৎ ক্রেতার আয়, অন্যান্য সম্পর্কিত দ্রব্যের মূল্য, ক্রেতার রুচি, অভ্যাস ও
পছন্দ, ক্রেতার সংখ্যা এবং দ্রব্যের ভবিষ্যৎ দাম, প্রভৃতি অপরিবর্তিত থাকলে কোন দ্রব্যের নিজস্ব দাম বাড়লে তার চাহিদা কমে এবং দাম কমলে চাহিদা বাড়ে। অর্থাৎ দ্রব্যের চাহিদার পরিমাণ আর দামের মধ্যে বিপরীত সম্পর্ক বিদ্যমান। দ্রব্যের চাহিদা ও নিজস্ব দামের মধ্যে এই
ক্রিয়াগত সম্পর্কই হলো চাহিদা বিধি।

মনে করি, এক কেজি চালের দাম যখন ৩০ টাকা তখন এক ব্যক্তি ৩ কেজি চাল ক্রয় করে। এখন যদি দাম বেড়ে ৩২ টাকা হয় তখন সে ৩ কেজি না কিনে ২ কেজি ক্রয় করে। আবার দাম কমে যদি ২৫ টাকা হয় তখন সে ৪ কেজি ক্রয় করে। সুতরাং
দেখা যাচ্ছে চালের দাম বেড়ে গেলে চাহিদা পরিমাণ কমে যায়। আবার দাম কমে গেলে চাহিদার পরিমাণ বেড়ে যায়। এভাবে দাম পরিবর্তনের সাথে সাথে চাহিদার পরিমাণের পরিবর্তন হয়। অর্থাৎ চালের দাম ও চাহিদার
পরিমাণের মধ্যে বিপরীত সম্পর্ক বিদ্যমান, এটিই হলো চাহিদা বিধি।

স্থিতিস্থাপক ও অস্থিতিস্থাপক চাহিদা এর ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে


অস্থিতিস্থাপক চাহিদা(Inelastic demand)
দামের পরিবর্তনের হার অপেক্ষা চাহিদার পরিবর্তনের হার কম হলে তাকে অস্থিতিস্থাপক চাহিদা বলে। অস্থিতিস্থাপক চাহিদার মান এককের থেকে কম হয়। অর্থাৎ EP >1

অস্থিতিস্থাপক চাহিদা রেখার ক্ষেত্রে চাহিদা রেখার ঢাল একটু বেশী বলে চাহিদা রেখা কিছুটা খাড়া আকৃতির হয়। অস্থিতিস্থাপক চাহিদার ক্ষেত্রে সাধারণত: দামের প্রভাব কম হয়। সাধারণত: নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ক্ষেত্রে
চাহিদা অস্থিতিস্থাপক হয়। যেমন- চাল, আটা, চিনি ইত্যাদি। অস্থিতিস্থাপক চাহিদার ক্ষেত্রে দ্রব্যের দাম বাড়লে মোট ব্যয় বৃদ্ধি পায় এবং দাম কমলে মোট ব্যয় হ্রাস পায়।

চাহিদা বিধির ব্যতিক্রমের কারণ বর্ণনা করতে হবে।
চাহিদা বিধির ব্যতিক্রম চাহিদা বিধিটির কতকগুলাে ব্যতিক্রম রয়েছে। নিচে এগুলাে সংক্ষেপে আলােচনা করা হল:
১। উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন বা জাঁকজমকপূর্ণ দ্রব্য : কতকগুলাে দ্রব্য আছে যেগুলাে নিছক ভােগের জন্য ক্রয় করা হয় না; যেমন- মনি-মুক্তা, হীরক, দামি পাথর, উচ্চ মূল্যের অলংকার, মূল্যবান পােশাক ইত্যাদির ক্ষেত্রে দাম বৃদ্ধি৷ পেলে মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। ফলে তাদের চাহিদাও বৃদ্ধি পায়। এসকল দ্রব্যের ক্ষেত্রে চাহিদা বিধিটি সাধারণত কার্যকর হয়
২। শেয়ার ও দ্রব্যের ফটকা বাজারে লেনদেন : শেয়ার বাজারে দেখা যায় শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পেলে তা আরও বৃদ্ধি পাবে এ আশায় ক্রেতারা অধিক সংখ্যক শেয়ার ক্রয় করে। সুতরাং চাহিদা বৃদ্ধি পায়। একইভাবে কোন কোম্পানির শেয়ারের দাম হ্রাস পেতে থাকলে সাধারণত চাহিদা আরও হ্রাস পায়।
৩। রুচি ও অভ্যাসের পরিবর্তন : মানুষের রুচি, পছন্দ, অভ্যাস প্রভৃতির পরিবর্তন ঘটলে চাহিদা বিধিটি কার্যকরী হবে না। লােকের রুচির পরিবর্তনের ফলে রেডিও বা টেলিভিশনের
চাহিদা বাড়ছে। এসব ক্ষেত্রে দাম বৃদ্ধি পেলেও চাহিদা বৃদ্ধি পায়।
৪া পরিস্থিতি বা পরিবেশের পরিবর্তন : পরিস্থিতি বা পরিবেশের পরিবর্তন ঘটলে চাহিদা বিধি কার্যকরী হয় না। যেমন, কলেরার প্রাদুর্ভাব হলে মাছের দাম যদি কমেও যায় তবু চাহিদা বাড়বে না।
৫৷ ভােগকারীর অজ্ঞতা : কোন কোন দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পেলেও অজ্ঞতাবশত ক্রেতাগণ একে মূল্যবান মনে করে অধিক পরিমাণে ক্রয় করে এবং দাম কমলে ঐ দ্রব্য নিকৃষ্ট মনে করে কম ক্রয় করে। এক্ষেত্রেও চাহিদা বিধি কার্যকর হবে না।

Leave a Comment