মাধ্যমিক ৮ম শ্রেনীর বিজ্ঞান ১৫তম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট উত্তর | Secondary 8th Class Science 15th Week Assignment Answer 2021

৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য অ্যাসাইনমেন্ট (১৫তম সপ্তাহ) | Assignment for 6th to 9th Class students (15th week)

মাধ্যমিক ৮ম শ্রেনীর বিজ্ঞান ১৫তম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট উত্তর | Secondary 8th Class Science 15th Week Assignment Answer 2021


ক) উভয় ক্ষেত্রে বস্তু দুটি একই সময়ে মাটিতে পড়ছে কিনা, কারণ বিশ্লেষণ, অভিকর্ষজ ত্বরনে ও ভরের প্রভাব।

একটি কাগজ ও একটি ভারি বল ১০ ফুট উচ্চতা থেকে ছেড়ে দিলে অভিকর্ষ বলের প্রভাবে মাটিতে পৌছায়।একই উচ্চতা থেকে একসাথে কাগজ ও ভাড়ি বল | ছেড়ে দিলে স্বাভাবিক ভাবে একই সময়ে মাটিতে পৌঁছানাের কথা। কারণ বস্তুর উপর ক্রিয়াশীল অভিকর্ষজ ত্বরণ বস্তুর ভরের উপর নির্ভর করে না।

তাই ভারি বল ও কাগজ উপর ক্রিয়াশীল অভিকর্ষজ ত্বরণ একই। সুতরাং একই সময় মাটিতে পড়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা ঘটবে না।

বাতাসের বাধার ভিন্নতার কারণেই মূলত এই ঘটনাটি ঘটে। বস্তু দুটিকে উপর থেকে ছেড়ে দিলে বাতাস তাদেরকে নিচে পড়তে বাধা সৃষ্টি করে। এই বাধা ভরের ও আয়তনের উপর নির্ভর করে।

সাধারণত উপর থেকে কোনাে বস্তুকে ছেড়ে দিলে অভিকর্ষ বলের প্রভাবে বস্তুটি নিচে পড়তে থাকে। একই উচ্চতা থেকে ভিন্ন ভরের দুটি বস্তুকে ছেড়ে দিলে মাটিতে পড়তে এদের ভিন্ন ভিন্ন সময়ের প্রয়ােজন হওয়ার কারণ হলাে বস্তুদ্বয়ের বিরুদ্ধে বাতাসের ঊর্ধ্বচাপ ও ঘর্ষণ বাধা। যে বস্তুটির ভর বেশি সেটির উপর বাতাসের উর্ধচাপ এবং ঘর্ষণের বাধা অতিক্রম করে নিচে পড়তে সময় কম লাগে কিন্তু যে বস্তুটির ভর কম সেটির উপর বাতাসের উর্ধ্বচাপ এবং ঘর্ষণ বাধা অতিক্রম করে নিচে পড়তে সময় বেশি লাগে। এজন্যই ভারি বল বাতাসের বাধা এবং ঘর্ষণ বাধা অতিক্রম করে কম সময়ে মাটিতে পড়ে কিন্তু কাগজের অংশটি বাতাসের বাধা এবং ঘর্ষণ বাধা অতিক্রম করে মাটিতে পড়তে বেশি সময় লাগে। বল এবং কাগজের মাটিতে পড়ার সময়ের। পার্থক্যের কারণেই বলটি  কাগজের আগেই মাটিতে পড়বে। কিন্তু বাতাসের বাধাজনিত বল কাজ না করলে বস্তুদ্বয় একই সময়ে মাটিতে পড়বে।


অভিকর্ষজ ত্বরণের প্রভাবঃ - বল প্রয়োগ করলে কোন বস্তুর বেগের পরিবর্তন হয়। প্রতি সেকেন্ডে যে বেগ বৃদ্ধি পায় তাকে ত্বরণ বলে। অভিকর্ষ বলের প্রভাবেও বস্তুর ত্বরণ হয়। এ তরণকে অভিকর্ষজ ত্বরণ বা মাধ্যাকর্ষণজনিত ত্বরণ বলা হয়।

অভিকর্ষজ ত্বরণ কে g দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যেহেতু
অভিকর্ষজ ত্বরণ এক প্রকার ত্বরণ, এর একক হবে ত্বরণের একক
অর্থাৎ মিটার/সেকেন্ড^২
ধরি, পৃথিবীর ভর =M, ভূপৃষ্ঠের বা এর নিকটে অবস্থিত কোন
বস্তুর ভর =m, বস্তু ও পৃথিবীর কেন্দ্রের মধ্যবর্তী দূরত্ব =d
তাহলে মহাকর্ষ সূত্র অনুসারে অভিকর্ষ বল, F=GMm/d^2
আবার বলের পরিমাপ থেকে আমরা পাই, অভিকর্ষ বল = ভর X
অভিকর্ষজ ত্বরণ
অর্থ্যাৎ , F=mg
উপরের দুটি সমীকরণ থেকে বলা যায়,
mg=GMm/d^2
বা, g= GM/d^2
এ সমীকরণের ডান পাশে বস্তুর ভর m অনুপস্থিত। সুতরাং
অভিকর্ষজ ত্বরণ বস্তুর ভরের উপর নির্ভর করে না।
যেহেতু G এবং পৃথিবীর ভর M ধ্রুবক, তাই g-এর মান পৃথিবীর
কেন্দ্র থেকে বস্তুর দূরত্ব d-এর উপর নির্ভর করে।

নির্দিষ্ট ভরের কোনাে বস্তুর ওজন অভিকর্ষজ ত্বরণের মানের উপর নির্ভরশীল। যেমন কোনাে বস্তুর ভর ১০০ কোজি হলে বিষুব অঞ্চলে বস্তুটির ওজন হতে ১০০ x ৯.৭৮ = ৯৭৮ নিউটন এবং

মেরু অঞ্চলে বস্তুটির ওজন হবে ১০০ x ৯.৮৩ = ১৮৩ নিউটন।



ভরের প্রভাবঃ--বস্তুর মধ্যে পদার্থের পরিমাণই হচ্ছে এর ভর। ভর হচ্ছে একটি ধ্রুবক রাশি যা ভূপৃষ্ঠে বা ভূপৃষ্ঠের উপরে বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তনের সাথে পরিবর্তিত হয় না। অর্থাৎ, পৃথিবীতে আমার ভর ৫০ কেজি হলে চাঁদেও ভর ৫০ কেজিই থাকবে। বস্তুর ওজন বস্তুর মৌলিক ধর্ম নয়। কোন বস্তুর ওজন থাকতে পারে আবার নাও থাকতে পারে। যেহেতু, বস্তুর ভর একটি ধ্রুব রাশি; সুতরাং বস্তুর ওজন অভিকর্ষজ ত্বরণ g এর উপর নির্ভর করে। যেসব কারণে অভিকর্ষজ ত্বরণের পরিবর্তন ঘটে সেসব কারণে  বস্তুর ওজনও পরিবর্তিত হয়। ভূপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে উঠা যায় বস্তুর ওজন তত কমতে থাকে।

চাঁদের অভিকর্ষজনিত ত্বরণের মান পৃথিবীর প্রায় ১/৬ ভাগ। তাই, পৃথিবীতে আমার ভর ৫০ কেজি হলেও চাঁদে আমার ওজন কমে যাবে।


পৃথিবী ও অন্য যেকোনো বস্তুর মধ্যে যে আকর্ষণ তাই অবিকর্ষ। অর্থাৎ অভিকর্ষ হলো এমন একটি শক্তি বা বল যার মাধ্যমে পৃথিবী তার কেন্দ্রাভিমুখে সকল বস্তুকে আকর্ষণ করে। বিশেষত এটি পৃথিবীর পৃষ্ঠের কাছাকাছি জিনিসগুলিকে প্রভাবিত করে। এটি ভর বা শক্তি দিয়ে সমস্ত জিনিস একে অপরের দিকে টান দেয়। সেই বলকে অভিকর্ষ বা অভিকর্ষ বল বা মাধ্যাকর্ষণ বল বা Gravity বলে


খ) মহাকর্ষ ও অভিকর্ষ সুত্রের সঠিক ব্যবহার।

অবিকর্ষ: কোনো বস্তুর উপর পৃথিবীর আকর্ষণকেই অভিকর্ষ বলা হয়। যেমনঃ যখন কোনও বস্তু পৃথিবীর দিকে পড়ে তখন তা দ্রুত এবং দ্রুততর হয় অর্থাৎ গাছের ফল মাটিতে পড়ে। এখানে পৃথিবী যেমন ফলকে অকর্ষণ করে তেমনি ফলটিও পৃথিবীকে আকর্ষণ করে। পৃথিবী অনেক বড় এবং আকর্ষণ বল অনেক বেশি হওয়ায় ফল মাটিতে পড়ে।

তাই বলা যায় যে, পৃথিবী ও অন্য যেকোনো বস্তুর মধ্যে যে আকর্ষণ তাই অবিকর্ষ।

মহাকর্ষঃ-- এ মহবিশ্বের যেকোনাে দুটি বস্তুর মধ্যে যে আকর্ষণ তাকে মহাকর্ষ বলে।

সূত্রঃ-- মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকণা একে অপরকে নিজ দিকে আকর্ষণ করে এবং এ আকর্ষণ বলের মান বস্তুকণাদ্বয়ের ভরের | গুণফলের সমানুপাতিক এবং এদের দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক এবং এ বল বস্তুকণাদ্বয়ের সংযােজক সরলরেখা বরাবর ক্রিয়া করে।

একটি কাগজ ও একটি ভারি বল ১০ ফুট উচ্চতা থেকে ছেড়ে দিলে অভিকর্ষ বলের প্রভাবে মাটিতে পৌছায়।একই উচ্চতা থেকে একসাথে কাগজ ও ভাড়ি বল | ছেড়ে দিলে স্বাভাবিক ভাবে একই সময়ে মাটিতে পৌঁছানাের কথা। কারণ বস্তুর উপর ক্রিয়াশীল অভিকর্ষজ ত্বরণ বস্তুর ভরের উপর নির্ভর করে না।
সাধারণত উপর থেকে কোনাে বস্তুকে ছেড়ে দিলে অভিকর্ষ বলের প্রভাবে বস্তুটি নিচে পড়তে থাকে। একই উচ্চতা থেকে ভিন্ন ভরের দুটি বস্তুকে ছেড়ে দিলে মাটিতে পড়তে এদের ভিন্ন ভিন্ন সময়ের প্রয়ােজন হওয়ার কারণ হলাে বস্তুদ্বয়ের বিরুদ্ধে বাতাসের ঊর্ধ্বচাপ ও ঘর্ষণ বাধা। যে বস্তুটির ভর বেশি সেটির উপর বাতাসের উর্ধচাপ এবং ঘর্ষণের বাধা অতিক্রম করে নিচে পড়তে সময় কম লাগে কিন্তু যে বস্তুটির ভর কম সেটির উপর বাতাসের উর্ধ্বচাপ এবং ঘর্ষণ বাধা অতিক্রম করে নিচে পড়তে সময় বেশি লাগে। এজন্যই ভারি বল বাতাসের বাধা এবং ঘর্ষণ বাধা অতিক্রম করে কম সময়ে মাটিতে পড়ে কিন্তু কাগজের অংশটি বাতাসের বাধা এবং ঘর্ষণ বাধা অতিক্রম করে মাটিতে পড়তে বেশি সময় লাগে। বল এবং কাগজের মাটিতে পড়ার সময়ের। পার্থক্যের কারণেই বলটি  কাগজের আগেই মাটিতে পড়বে। কিন্তু বাতাসের বাধাজনিত বল কাজ না করলে বস্তুদ্বয় একই সময়ে মাটিতে পড়বে।

পড়ন্ত বস্তুর সূত্রাবলি : পড়ন্ত বস্তু সম্পর্কে গ্যালিলিও তিনটি সূত্র বের করেন। এগুলােকে পড়ন্ত বস্তুর সূত্র বলে। এই সূত্রগুলাে একমাত্র স্থির অবস্থান থেকে বিনা বাধায় পড়ন্ত বস্তুর ক্ষেত্রে প্রযােজ্য অর্থাৎ বস্তু পড়ার সময় স্থির অবস্থান থেকে পড়বে, এর কোনাে আদি বেগ থাকবে না। বস্তু বিনা বাধায় মুক্তভাবে পড়বে অর্থাৎ এর উপর অভিকর্ষজ বল ছাড়া অন্য কোনাে বল ক্রিয়া করবে না।
প্রথম সূত্র : স্থির অবস্থান এবং একই উচ্চতা থেকে বিনা বাধায় পড়ন্ত সব বস্তু সমান সময়ে সমান পথ অতিক্রম করে।

দ্বিতীয় সূত্র : স্থির অবস্থান থেকে বিনা বাধায় পড়ন্ত বস্তুর নির্দিষ্ট সময়ে (t) প্রাপ্ত বেগ (v) ওই সময়ের সমানুপাতিক।

তৃতীয় সূত্র : স্থির অবস্থান থেকে বিনা বাধায় পড়ন্ত বস্তু নির্দিষ্ট সময়ে যে দূরত্ব (h) অতিক্রম করে, তা ওই সময়ের (t) বর্গের সমানুপাতিক


মাধ্যমিক ৮ম শ্রেনীর বিজ্ঞান ১৫তম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট উত্তর | Secondary 8th Class Science 15th Week Assignment Answer 2021
ইমেজ সোর্স কালের কণ্ঠ


পড়ন্ত বস্তুর সূত্রাবলির ব্যাখ্যা

প্রথম সূত্র : এ সূত্রানুসারে স্থির অবস্থান থেকে কোনো বস্তু ছেড়ে দিলে তা যদি বিনা বাধায় মাটিতে পড়ে, তাহলে মাটিতে পড়তে যে সময় লাগে তা বস্তুর ভর, আকৃতি বা আয়তনের ওপর নির্ভর করে না। বিভিন্ন ভরের, আকারের ও আয়তনের বস্তুকে যদি একই উচ্চতা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং এগুলো যদি বিনা বাধায় মুক্তভাবে পড়তে থাকে, তাহলে সবগুলোই একই সময়ে মাটিতে পৌঁছবে।

দ্বিতীয় সূত্র : দ্বিতীয় সূত্র থেকে পাওয়া যায় t সেকেন্ড শেষে বস্তুর বেগ v সমানুপাতিক t, অর্থাৎ কোনো বস্তুকে যদি স্থির অবস্থান থেকে বিনা বাধায় পড়তে দেওয়া হয়, তবে প্রথম সেকেন্ড পরে যদি এটি v বেগ অর্জন করে, তবে দ্বিতীয় সেকেন্ড পরে এটি 2v বেগ অর্জন করবে। সুতরাং t1, t2, t3... সেকেন্ড পরে যদি বস্তুর বেগ যথাক্রমে v1, v2, v3... ইত্যাদি হয়, তবে এ সূত্রানুসারে, v1/t1=v2/t2=v3/t3...=ধ্রুবক


তৃতীয় সূত্র : তৃতীয় সূত্র থেকে পাওয়া যায় : সেকেন্ডে বস্তুর অতিক্রান্ত দূরত্ব h সমানুপাতিক t2 ।

অর্থাৎ কোনো বস্তুকে যদি স্থির অবস্থান থেকে বিনা বাধায় পড়তে দেওয়া হয়, তবে এক সেকেন্ডে এটি h দূরত্ব অতিক্রম করে, দুই সেকেন্ডে এটি h×22 বা 4h দূরত্ব, তিন সেকেন্ডে এটি h×32 বা 9h দূরত্ব অতিক্রম করবে।

Leave a Comment