HSC Diploma in Commerce Economics 12th Class 3rd Week Assignment Answer 2021 | এইচএসসি ডিপ্লোমা ইন কমার্স অর্থনীতি ১২ শ্রেনী ৩য় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১


অ্যাসাইনমেন্ট :  অভাব দূরীকরণে সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অবদান বিশ্লেষণ।
শিখনফল/বিষয়বস্তু :
অধ্যায়ঃ ১ অর্থনৈতিক সমস্যা
নির্দেশনা (সংকেত/ ধাপ/ পরিধি):
অভাবের ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে
অভাবের প্রকারভেদ ব্যাখ্যা করতে হবে।
সম্পদের ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে
সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ভুমিকা ব্যাখ্যা করতে হবে।
উত্তর সমূহ
  • অভাবের ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে
অভাব হলো কোনো বস্তু বা সেবা পাবার ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষা। সাধারণ অর্থে অভাব বলতে আর্থিক অনটনকে বোঝায়। কিন্তু অর্থনীতিতে অভাব শব্দটি বিশেষ অর্থে ব্যবহূত হয়। অর্থনীতিতে কোনো কিছু পাওয়া বা কোনো দ্রব্য বা সেবা
পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে অভাব বলে।

অর্থনীতিতে  কোন কিছু পাবার আকাঙ্খাকে
অভাব বলে। তবে কোন কোন অর্থনীতিবিদ
আকাঙ্খার পেছনে অর্থ ব্যয়ের ইচ্ছাকেও জুড়ে
দেন। তাহারা ব্যাখ্যা দেন যে, আমি একটি জিনিস চাই কিন্তু টাকা খরচ করবো না, তাহলে সেটা অভাব নয়।

সাধারণত কোন কিছু চাওয়াই হল অভাব। জীবনধারণের জন্য প্রয়োজন আছে কিন্তু হাতের নাগালে নেই এমন দ্রব্য ও পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে অভাব বলে।
প্রতিনিয়তই মানুষ নানা অভাবের সম্মুখীন হচ্ছে। বস্তুতপক্ষে, মানুষের বেঁচে থাকার প্রয়োজনেই অভাবের উদ্ভব। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, পরিবার প্রতিপালন, শিক্ষা প্রভৃতি অভাবের সম্মুখীন হচ্ছে মানুষ। আর অভাব পূরণের জন্য নানাবিধ কর্মপর্যায় গৃহীত হচ্ছে। এর ফলে সভ্যতারও অগ্রগতি হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে মানুষের সর্বপ্রকার অর্থনৈতিক কার্যাবলির মূলে রয়েছে অভাববোধ। 

সাধারণ অর্থে অভাব বলতে আর্থিক অনটনকে বোঝায়। কিন্তু অর্থনীতিতে অভাব শব্দটি বিশেষ অর্থে ব্যবহূত হয়। অর্থনীতিতে কোনো কিছু পাওয়া বা কোনো দ্রব্য বা সেবা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে অভাব বলে। প্রতিনিয়তই মানুষ নানা অভাবের সম্মুখীন হচ্ছে। বস্তুতপক্ষে, মানুষের বেঁচে থাকার প্রয়োজনেই অভাবের উদ্ভব।

খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, পরিবার প্রতিপালন, শিক্ষা প্রভৃতি অভাবের সম্মুখীন হচ্ছে মানুষ। আর অভাব পূরণের জন্য নানাবিধ কর্মপর্যায় গৃহীত হচ্ছে। এর ফলে সভ্যতারও অগ্রগতি হচ্ছে।
প্রকৃতপক্ষে মানুষের সর্বপ্রকার অর্থনৈতিক কার্যাবলির মূলে রয়েছে অভাববোধ।

  • অভাবের প্রকারভেদ ব্যাখ্যা করতে হবে।
অভাব মানে কোন কিছু নেই। যার অস্তিত্ব নেই, তাই অভাব। কোন কিছু নেই এটা তাে অস্বীকার করা যায় না। দিনের আকাশে তারা নেই, অমাবস্যায় চাদ নেই, গরমকালে শীত নেই: — কোন – না – কোন কিছুর অভাব কোনা কোন সময় বােঝা যায়ই। তাই অভাবকে না মেনে উপায় নেই। শীতের বেলায় গাছের শাখার দিকে তাকিয়ে ডালগুলি আছে বুঝি কিন্তু পাতার অভাব তাে অস্বীকার করা যায় না। তাই ভাবপদার্থ যেমন আছে অভাবকেও পদার্থ হিসাবে স্বীকার করতেই হয়।

অভাবের প্রকার: অভাব দু’প্রকার, যথা — সংসৰ্গাভাব ও অন্যোন্যাভাব।
সংসৰ্গাভাব: সংসৰ্গাভাব বলতে কোন বস্তুতে অন্য বস্তুর অভাব বােঝায়। যেমন, ‘কলসীতে জল নেই’ — এখানে কলসীতে জলের অভাব রয়েছে বা কলসীর সঙ্গে জলের সংসর্গের অভাব প্রকাশ পাচ্ছে।
অন্যোন্যাভাব: অন্যোন্যাভাব বলতে এক বস্তু আর এক বস্তু নয় ( ক — খ নয় ) বােঝায়। অন্যোন্যাভাব হল দুটি স্বতন্ত্র বস্তুর মধ্যে অভিন্নতার অভাব। যেমন , হাতি – ঘােড়া নয়, চেয়ার – টেবিল নয়।
সংসর্গাভাব তিন প্রকার— (ক) প্রাগভাব, (খ) ধ্বংসাভাব ও (গ) অত্যন্তাভাব ।

( ক) প্রাগভাব: প্রাক বা পূর্ববর্তী অভাবই প্রাগভাব। কোন বস্তু সৃষ্ট বা উৎপন্ন হওয়ার পূর্বে বস্তুর যে অভাব থাকে, তাই প্রাগভাব। যেমন — সিমেন্ট, বালি, ইট, লােহা দিয়ে পাকাবাড়ি তৈরি হবে। সুতরাং এখন পাকাবাড়ি নেই। নির্মিত
হওয়ার পূর্বে সিমেন্ট, বালি, ইট, লােহার মধ্যে পাকাবাড়ির যে অভাব আছে, তাই হল প্রাগভাব। প্রাগভাবের আদি নেই, অথচ অন্ত আছে। পাকাবাড়ি নির্মিত হওয়ার পূর্বে উপরিউক্ত
উপাদানের মধ্যে পাকাবাড়ির অস্তিত্ব ছিল না। পাকাবাড়ি নির্মিত হওয়ার পূর্বে পাকাবাড়ির অভাবের কোন আদি নেই। কিন্তু যেই বাড়িটি নির্মিত হল, সেই মুহূর্তে পাকাবাড়ির প্রাগভাব লােপ পেয়ে গেল, তাই প্রাগভাবের অন্ত বা শেষ
আছে।

( খ) ধ্বংসাভাব ঃ  উৎপন্ন হওয়ার পর কোন বস্তু ধ্বংস হয়ে গেলে তার যে অভাব, তাই ধ্বংসাভাব। একটি মাটির কলসী ভেঙে গেলে কলসীটির ধ্বংসাভাব ঘটে। কলসীটি ভেঙে গিয়ে টুকরোগুলি ছিটিয়ে ছড়িয়ে থাকে। কিন্তু টুকরােগুলির মধ্যে
কলসী নেই। ধ্বংসাভাবের যদিও আদি আছে, তবু অন্ত নেই । কলসীটি কোন এক সময়ে ধ্বংস হয়েছে, তাই কলসীটির উৎপত্তির আরম্ভ বা আদি আছে। কিন্তু কলসীটির অন্ত নেই, কেননা সেই
কলসীটি আর তৈরি করা যাবে, যেটি ভেঙে গেল। যদিও একই রকম আর একটি নতুন মাটির কলসী তৈরি করা যায়, কিন্তু যে মাটির কলসী ভেঙে গেল, ঠিক সেই কলসীটিকে তৈরি করা
সম্ভব নয়। বস্তুর ধ্বংসজনিত অভাব রয়ে যায়, ধ্বংসাভাবের অন্ত বা শেষ নেই।

( গ) অত্যন্তাভাবঃ কোন একটি বস্তুতে অন্য একটি বস্তুর চিরকালের অভাবকে অত্যন্তাভাব বলা হয়। অত্যন্তভাব ত্ৰৈকালিক বা তিন কালের অভাব – অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতেও থাকে। অত্যন্তভাব অনাদি ও অনন্ত অর্থাৎ এই অভাবের আদি বা আরম্ভ নেই , অন্ত বা শেষ নেই। যেমন, বায়ুতে
বর্ণের অভাব অত্যন্তভাব , যা তিন কালেই থাকে । খরগােশে শিঙের অভাব চিরকালের। ঘটেতে চেতনার অভাব চিরদিনের।

অনন্যান্যাভাব : দুই বস্তুর পারস্পরিক ভেদ বা ভিন্নতাই অন্যোন্যাভাব । যেমন, ঘট পট নয়। ঘটের মধ্যে পটের রূপ থাকতে পারে না। অন্যোন্যাভাব হল ঘটে পটের অভাব, পটে ঘটের অভাব। সংসৰ্গাভাব বলতে বােঝায় দুই বস্তুর মধ্যে সংযােগের অভাব, অন্যোন্যাভাব বলতে বােঝায় দুই বস্তুর মধ্যে অভিন্নতার অভাব। অন্যোন্যাভাব নিত্য। অন্যোন্যাভাবের আদি নেই, অন্তও নেই।

  • সম্পদের ধারণা ব্যাখ্যা করতে হবে
সম্পদ শব্দের ইংরেজি পরিভাষা হলো Resource (Re+Source)। অর্থাৎ যে উৎস থেকে বারেবারে মানুষের চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় তাকে সম্পদ বলা হয়। অন্যরূপে বলা যায় কোন বস্তু বা
পদার্থ কোন কাজ সম্পন্ন করলে বা কোন বস্তু বা পদার্থের মধ্যে যে কার্যকারিতা শক্তি নিহিত আছে এবং যার ফলে মানুষের চাহিদা বারবার মেটানো সম্ভব হয় তাকে সম্পদ বলা হয়।

অধ্যাপক E.W Zimmerman এর লেখা ‘ World Resources and Industries’ থেকে ‘সম্পদ ‘ সম্পর্কে আমরা একটি স্পষ্ট ধারণা পেয়ে থাকি। তাঁর মতে – সম্পদ কোন বস্তু বা পদার্থ নয় কিন্তু কোন বস্তু বা পদার্থ যে কার্যকারিতা শক্তি রয়েছে তাই হল সম্পদ। অর্থাৎ সম্পদ হলো পদার্থের বা বস্তুর সেই কার্য শক্তি যা মানুষের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়। সুতরাং বলা যেতে পারে যে মানুষের নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণের উপায় ও মানুষের অর্থনৈতিক বিকাশের মূল ভিত্তি হল সম্পদ।

Encyclopaedia of Social Science অনুসারে “Resources are those aspects of men’s environment which render possible or facilitate the satisfaction of human wants and the attainment of social objectives.” (volume xi)

তাহলে আমরা সহজেই বুঝতে পারছি যে পৃথিবীতে অবস্থিত জল, আলো-বাতাস, উর্বর জমি, উদ্ভিদ, জীবজন্তু ,কয়লা, পেট্রোলিয়াম সব কিছু সম্পদের আওতায় পড়ে । এগুলি কিন্তু
সবই বস্তুগত সম্পদ, এর পাশাপাশি কিছু অবস্তুগত সম্পদও বর্তমান, যেমন – মানুষের বিদ্যা ,বুদ্ধি, জ্ঞান ,সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য ইত্যাদি।

  • সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ভুমিকা ব্যাখ্যা
  • করতে হবে।
সাধারণত আমরা সম্পদ বলতে টাকা-পয়সা বা ধন-সম্পত্তিকে বুঝি। যেমন- আমরা বলে থাকি জনি সাহেব অনেক টাকাপয়সার মালিক। তার অনেক সম্পদ। কিন্তু অর্থনীতিতে সম্পদ বলতে
অর্থনৈতিক দ্রব্যকে বুঝায়। অর্থনীতিবিদমদের দৃষ্টিতে, “সম্পদ হচ্ছে ঐ সমস্ত দ্রব্যাদি যাদের বিনিময় মূল্য আছে।” যেমন- ঘরবাড়ি, টিভি-ফ্রিজ, জমি-জমা ইত্যাদি বস্তুগত সম্পদ।

অন্যদিকে ডাক্তারের সেবা, শিক্ষকের শিক্ষাদান ইত্যাদি অবস্তুগত সম্পদ। উপরের জিনিসগুলো পেতে আমাদের অর্থ ব্যয় করতে হয় যা বিনিময় মূল্য হিসেবে পরিচিত।

অর্থনীতিতে কোনো দ্রব্যকে সম্পদ বলে গণ্য হতে হলে এর চারটি বৈশিষ্ট্য অবশ্যই থাকতে হবে। বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছে :
  1. উপযোগ: উপযোগ হচ্ছে মানুষের অভাব পূরণের ক্ষমতা। কোনো দ্রব্যের উপযোগ না থাকলে কেউই সেই দ্রব্যের আকাক্সক্ষা করবে না এবং সেই দ্রব্যের পরিবর্তে অর্থ ব্যয় করতে চাইবে না। সুতরাং সম্পদের উপযোগ বা অভাব পূরণের ক্ষমতা থাকতে হবে।
  2. অপ্রাচুর্যতা: কোনো দ্রব্যের উপযোগ থাকলেই যে মানুষ অর্থ ব্যয় করতে উৎসাহি হবে এমন কোনো কথা নেই। যেমনঃ বাতাস, নদীর পানি, সূর্যের আলোর উপযোগ আছে, কিন্তু এসবের যোগান অসীম হওয়ায় এদের বিনিময় মূল্য নেই। অর্থাৎ কোনো দ্রব্য সম্পদ হতে হলে তার চাহিদার তুলনায় যোগান কম থাকবে।
  3. হস্তান্তরযোগ্যতা: সম্পদের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে হস্তান্তরযোগ্যতা। সাধারণ অর্থে হস্তান্তরযোগ্যতা বলতে কোনো দ্রব্যের এক স্থান হতে অন্যস্থানে স্থানান্তর করা বুঝায়। কিন্তু অর্থনীতিতে হস্তান্তরযোগ্যতা বলতে দ্রব্যের মালিকানা পরিবর্তন বুঝায়। যেমন- বাড়ি বা জমি একস্থান থেকে অন্যস্থানে সরানো যায় না; কিন্তু বিক্রির মাধ্যমে মালিকানার পরিবর্তন সম্ভব। তাই বাড়ি বা জমি সম্পদ।
  4. বাহ্যিকতা: অর্থনৈতিক দ্রব্য বা সম্পদ হতে হলে সেসব দ্রব্যের বাহ্যিকতা বা বাহ্যিক অস্তিত্ব থাকতে হবে। যেমনঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, ডাক্তারের সেবা ইত্যাদি। কিন্তু মানুষের অন্তর্নিহিত গুণ সম্পদ নয়। যেমন-কবির প্রতিভা, মায়ের স্নেহমমতা, ডাক্তারের দক্ষতা ইত্যাদি সম্পদ নয়।

Leave a Comment