online income halal or haram? What does Islam say | অনলাইনে আয় হালাল নাকি হারাম? ইসলাম কি বলে?

অনলাইনে অনেক ফ্রিল্যান্সিং কোম্পানি আছে ৷ এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ওডেস্ক, এলান্স, ল্যান্সটেক, ফ্রিল্যান্সার ইত্যাদি। এসব কোম্পানিগুলোতে কোনোরুপ ফি ছাড়াই রেজিস্ট্রেশন করে স্বীয় যোগ্যতা অনুযায়ী ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডাটাএন্ট্রি ইত্যাদি কাজ পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হয়।

বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন কোম্পানি পছন্দ অনুযায়ী অনলাইনে এসব কোম্পানীর মাধ্যমে কাজ দেয় এবং নির্ধারিত হারে পারিশ্রমিক প্রদান করে। এর মধ্যে কোন সূদী বা হারাম লেনদেনের প্রসঙ্গ নেই। বরং স্বীয় কর্মদক্ষতা এবং পরিশ্রমের বিনিময়ে এখানে উপার্জন করতে হয়।

তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই কুরআনের একটি মৌলিক নীতির প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে ৷ পবিত্র কুরআন বলছে,

وَ تَعَاوَنُوۡا عَلَی الۡبِرِّ وَ التَّقۡوٰی ۪ وَ لَا تَعَاوَنُوۡا عَلَی الۡاِثۡمِ وَ الۡعُدۡوَانِ ۪ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ الۡعِقَابِ ﴿۲﴾

‘সৎকর্ম ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পরের সহযোগিতা কর। মন্দকর্ম ও সীমালঙ্ঘনে পরস্পরের সহযোগিতা করো না। আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ আযাব প্রদানে কঠোর।’
[সূরা মাইদাঃ২]


এই আয়াত থেকে যে মূলনীতি বেরোয় তা হলো, “হালাল কাজে সহযোগিতা এবং হারাম কাজে অসহযোগিতা” ৷ সুতরাং এ নীতিতেই অনলাইন হোক বা অফলাইন ব্যবসা করা যাবে ৷ ইনকাম করা যাবে ৷ তাই কোন এ্যালকোহল, সিনেমা বা সূদী প্রতিষ্ঠানের কাজে অংশ নেওয়া যাবে না।

অন্যদিকে সদ্য গজিয়ে ওঠা কিছু একটি ফ্রিল্যান্সার প্রতিষ্ঠান, যাদের কার্যক্রম অন্যদের মত নয়। বরং ফ্রিল্যান্সিং এর সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে এরা মূলতঃ এমএলএম ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। নানা আকর্ষণীয় প্যাকেজ দেখিয়ে তারা সদস্য ভর্তি করে এবং প্রায় বিনা পরিশ্রমে মোটা অংকের লাভের প্রতিশ্রুতি দেয়। এরা অসাধু এমএলএম ব্যবসার সাথে জড়িত বলে এদের সাথে সংশ্লিষ্ট হওয়া মোটেই বৈধ হবে না।


বিধর্মীদের সাথে যেহেতু ব্যবসা করা জায়েজ আছে;সে হিসেবে ফ্রীল্যান্সিং করে বিধর্মীদের কাজ করে টাকা ইনকাম করলে তা হারাম হবে না ৷

তবে প্রতারণার আশ্রয় নিলে তা হালাল হবে না ৷ যদি আপনি অনলাইনে কারো সাথে প্রতরণা করে ইনকাম করেন তাহলে তা আপনার জন্য হারাম হবে। 


নারীরা অনলাইনে ইনকাম করতে পারবে কিনা?

পর্দার আড়ালে নারীদের ব্যবসা করা জায়েজ আছে। যদি মেয়েরা অনলাইনে পরিশ্রম করে টাকা ইনকাম করেন তা হালাল হবে। তবে, এর জন্য হারাম কোন কাজ করা যাবে না। হারাম কাজ করে ইনকাম করলে তা হারাম হবে। যেমনঃ প্রতরণা, নেগেটিভ কথা-বার্তা বলে ইনকাম, নেগেটিব কোন ভিডিও আপলোড, নেগেটিব কোন কাজ।
বাজি ধরে ইনকাম করার কিছু সাইট আছে ৷ যেহেতু আগতে বাজি জুয়া হারাম, সুতরাং এটা অনলাইনে হালাল হয় কী করে?

কাজ করার আগে ভেবে দেখুন, যদি অনলাইনের কাজটি আপনি বাস্তবে করতেন তা হালাল বা হারাম হবে কিনা? যদি আপনার মনে লাগে হারাম হবে, তাহলে ঐ কাজটি করবেন না। যদি না বুজেন তবে ইসলামিক স্কলারদের সহায়তা নিন ৷

ইউটিউব থেকে আয়




এবার আসি ইউটিউব নিয়ে ৷ প্রথমে আমাকে জানতে হবে, ইউটিউবে ভিডিও আপলোডের মাধ্যমে যে টাকা আয় করা হয় তার সোর্স কী? কেন আমাকে গুগল টাকা দিচ্ছে?

গুগলের একটি বিশেষ সার্ভিস–গুগল এডসেন্স। এর মাধ্যমে তারা বিভিন্ন কম্পানির বিজ্ঞাপন অর্থের বিনিময়ে ইউটিউবসহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সম্প্রচার করে। আর ওখান থেকে একটা নির্ধারিত একটা অংশ তারা ইউটিউবারদের দিয়ে থাকে। সুতরাং বিজ্ঞাপনগুলো যদি অশ্লীল ও হারাম পণ্যের হয়, তাহলে তা থেকে প্রাপ্ত অর্থ হালাল হবে না। বরং, হারাম অর্থ হওয়ার পাশাপাশি হারামের প্রচার ও সহযোগিতা করার গোনাহ হবে। মহান আল্লাহ বলেন,

اِنَّ الَّذِیۡنَ یُحِبُّوۡنَ اَنۡ تَشِیۡعَ الۡفَاحِشَۃُ فِی الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ۙ فِی الدُّنۡیَا وَ الۡاٰخِرَۃِ ؕ وَ اللّٰہُ یَعۡلَمُ وَ اَنۡتُمۡ لَا تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۹﴾
নিশ্চয় যারা এটা পছন্দ করে যে, মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ুক, তাদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না ৷
[সুর নূর, আয়াত : ১৯]

পক্ষান্তরে ‘এডসেন্স’ এ সেনসিটিভ অপশন বন্ধ করার অপশন আছে। যদি কেউ সেটা বন্ধ রেখে অনৈসলামিক-বিজ্ঞাপনগুলো উপেক্ষা করা যায়, তাহলে তা থেকে প্রাপ্ত অর্থ হালাল হবে।

ইবাদাত কবুলের অন্যতম শর্ত হালাল উপার্জন ৷ সুতরাং আমাদের ইনকাম শতভাগ হালাল হওয়া চাই ৷

লিখেছেনঃ

মাওলানা দীদার মাহদী 


Leave a Comment